নিউজ

লাগবে না আঙ্গুলের ছাপ! রেশন তোলার ক্ষেত্রে নতুন নিয়ম চালু করলো সরকার

নিম্নবিত্ত মানুষদের মুখে দুমুটো অন্ন তুলে দেওয়ার জন্য চালু হয় বিনামূল্যে রেশন সরবরাহ। কেন্দ্র এবং রাজ্য সরকারের উদ্যোগে বিভিন্ন ক্যাটাগরি অনুযায়ী ভারতবর্ষের গরীব মানুষদের বিনামূল্যে রেশন দেওয়া হয়। পূর্বে এই রেশন বন্টন সাধারণভাবে করা হলেও বর্তমানে ডিজিটাল মাধ্যমে রেশন সরবরাহ করা হয়। আর তার প্রধান কারণ হলো রেশন কার্ডের জালিয়াতি।

প্রসঙ্গত, বিভিন্ন জায়গায় এই রেশন কার্ড নিয়ে জালিয়াতি করতে দেখা যায়। কোথাও মৃত ব্যক্তির রেশন কার্ড সারেন্ডার না করে রেশন তুলতে দেখা যায়। তো কোথাও আবার এক ব্যক্তির রেশন কার্ড নিয়ে রেশন তুলে নিতে দেখা যায় অন্য ব্যক্তিকে। এছাড়াও, কোন কোন জায়গায় আবার রেশন ডিলাররা গ্রাহকদের বিনামূল্যে রেশন সামগ্রী পাওয়া থেকে বঞ্চিত করে চড়া দামে তা বাজারে বিক্রি করে দেয়।

মূলত রেশন সামগ্রী বন্টনে এই দুর্নীতি ঠেকাতেই ডিজিটাল মাধ্যমে রেশন সরবরাহের ব্যবস্থা করা হয়। বায়োমেট্রিক পদ্ধতিতে রেশন সরবরাহ করা হয়। তার জন্য রেশন কার্ডের সাথে আধারের সংযুক্তি করন করা হয়। যার ফলে অনেক ভুয়ো রেশন কার্ড বাদ চলে যায়। দুর্নীতিও ঠেকানো যায় কিন্তু এক্ষেত্রে রেশন গ্রাহকদের নানা সমস্যা দেখা দেয়। রেশন সামগ্রী তুলতে গিয়ে অনেকেরই আঙুলের ছাপ মেলে না। মূলত বয়স্কদের ক্ষেত্রেই এই সমস্যা বেশি দেখা যায়। তবে তার জন্য ফোনে আসা ওটিপির মাধ্যমে রেশন সামগ্রী তোলার ব্যবস্থা করা হয়। কিন্তু সেক্ষেত্রেও রেশন ডিলাররা অভিযোগ করছে যে নেটওয়ার্কের সমস্যার কারণে ওটিপি আসছে না বা ওটিপি আসতে অনেকটা সময় লেগে যাচ্ছে।

তাই এইসব নানা ধরনের সমস্যা দেখা দেওয়ায় পশ্চিমবঙ্গের খাদ্য সরবরাহ দপ্তর রেশন সরবরাহে আনতে চলেছে এক নতুন নিয়ম। ইতিমধ্যেই পরীক্ষামূলক ভাবে প্রতি জেলার পাঁচটি রেশন দোকানে এই নিয়ম চালু করা হয়েছে। তবে সরকার সূত্রে খবর, খুব শীঘ্রই রাজ্যের প্রতিটি রেশন দোকানেই এই নিয়ম চালু করা হবে। তবে পশ্চিমবঙ্গে এই নিয়ম কার্যকরী হলে তা আগামীতে দেশের অন্যান্য রাজ্যেও এই নিয়ম ছড়িয়ে দেওয়া হবে বলে খবর রয়েছে। যার ফলে রেশন সরবরাহের দুর্নীতি অনেকটাই ঠেকানো যাবে।

কি এই নিয়ম? এই নিয়ম আর কিছুই নয়, এই নিয়ম হল আর আঙ্গুলের ছাপ স্ক্যান করে হবে না। চোখের রেটিনা স্ক্যান করে গ্রাহক দেওয়া হবে রেশন সামগ্রী। বিশেষজ্ঞদের মতানুসারে জানা গিয়েছে, আঙ্গুলের রেখা পরিবর্তন হলেও চোখের রেটিনা জন্ম থেকে মৃত্যু পর্যন্ত একই থাকে। ফলে পশ্চিমবঙ্গ সরকার চোখের রেটিনা স্ক্যানের মাধ্যমে গ্রাহকদের রেশন সরবরাহ করার নিয়ম চালু করতে চলেছে। এপ্রিল মাস থেকেই জেলার বেশ কিছু রেশন দোকানে এই নিয়ম চালু হয়েছে। এই নিয়ম মেনে রেশন বন্টনের জন্য রেশন ডিলারদের খাদ্য সরবরাহ দপ্তর থেকে প্রশিক্ষণেরও ব্যবস্থা করা হয়েছে। তবে খুব শীঘ্রই রাজ্যের প্রত্যেক রেশন ডীলারে এই নিয়ম চালু হবে বলে জানা গিয়েছে। তবে এই নতুন নিয়ম কতটা কার্যকরী হয় সেটাই দেখার।