
বর্তমান সময়ে চাকরির যা অবস্থা তাতে করে বহু শিক্ষিত ছেলে-মেয়েরা কৃষিকাজকে পেশা হিসেবে বেছে নিচ্ছেন। যেখানে কম বিনিয়োগে ভালো টাকা আয় করা যাচ্ছে। সেরকমই এক দুর্দান্ত চাষ হল মাশরুম চাষ। যে চাষে ৫০ হাজার টাকারও কম বিনিয়োগে ভালো মুনাফা অর্জন করা যায়। শীতকালীন সময়ে মাশরুমের বেশ চাহিদা দেখা যায়। ফলে নিজের বাড়িতেই শীতকালসহ সারা বছর এই লাভজনক ব্যবসা করা যেতে পারে। তাই চলুন এই ব্যবসার পদ্ধতি, বিনিয়োগ, লাভ সবকিছু বিষয়ে সবিস্তারে জেনে নেওয়া যাক।
অনেকেই রয়েছেন যারা মাশরুম চাষের পদ্ধতি ঠিকঠাক জানেন না। তবে এক্ষেত্রে মাশরুম চাষের জন্য বিভিন্ন কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় বা গবেষণা কেন্দ্রে এই মাশরুম চাষের জন্য প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়। কোনো ব্যক্তি যদি এই ব্যবসাকে উর্ধ্বমুখী করতে চান তাহলে তাদের উপযুক্ত প্রশিক্ষণ নেওয়া দরকার। এক্ষেত্রে সরকার তরফে মাশরুম চাষের জন্য ৪০ শতাংশ ভর্তুকি প্রদান করা হয়।
এবার জেনে নেওয়া যাক মাশরুম চাষের পদ্ধতি সম্পর্কে। মাশরুম চাষে প্রতি বর্গমিটারে ১০ কিলোগ্রাম মাসশরুম উৎপাদন করা যায়। এই মাশরুম চাষের জন্য নূন্যতম ৪০×৩০ ফুট জায়গার প্রয়োজন হয়। যে জায়গায় তিন ফুট চওড়া তিনটি র্যাক তৈরি করে মাশরুম উৎপাদন করা যায়।
মাশরুম উৎপাদনের জন্য দরকার কম্পোস্টের। এই কম্পোস্ট তৈরি করার জন্য ধানের খোসা ভিজিয়ে রাখতে হয়। আর তার সাথে দিয়ে দিতে হয় ডিএপি, ইউরিয়া, পটাশ, গমের ভুসি, জিপসাম এবং কার্বোফুরান। প্রায় দেড় মাস মতো এই মিশ্রণটি রেখে দিতে হয়। এই সময়ের মধ্যেই কম্পোস্ট তৈরি হয়ে যায়। তারপর সমান পরিমাণে গোবর এবং মাটির মিশ্রণে দেড় ইঞ্চি একটি পুরু স্তর ছড়িয়ে দিতে হয়। তার উপরে দিতে হয় কম্পোস্টের দুই থেকে তিন ইঞ্চি পুরু স্তর। এরপর চাষের জায়গায় ভালো আদ্রতা বজায় রাখার জন্য প্রতিদিন ২ থেকে ৩ বার জল স্প্রে করতে হয়। এরপর কম্পোস্টের ১২- ইঞ্চি স্তর জমলে মাশরুম উৎপাদন শুরু করা যায়।
এবার জেনে নেওয়া যাক বিনিয়োগ এবং লাভের পরিমাণ সম্পর্কে। তবে এই সম্পর্কে জানাতে গিয়ে উত্তরপ্রদেশের বারাবাঁকি জেলার সাইদানপুর গ্রামের কৃষক রাজেশের মাশরুম চাষে সাফল্যের গল্প জেনে নেওয়া যাক। জানা গিয়েছে কৃষক রাজেশ ২০,০০০ টাকা বিনিয়োগে এই মাশরুম চাষ শুরু করেন। পরবর্তীতে তিনি ধীরে ধীরে তার এই ব্যবসায় বিনিয়োগের পরিমাণ বাড়ান। রাজেশের মতে মাশরুম চাষে ১ লক্ষ টাকা বিনিয়োগ করলে ৪-৫ মাসে ৩-৩.৫ লাখ টাকা আয় করার সম্ভাবনা রয়েছে। তবে বর্তমানে তিনি তার এই মাশরুম ব্যবসায় ৫-৬ লাখ টাকা বিনিয়োগ করে ব্যবসা বাড়িয়েছেন। তবে এই ব্যবসার জন্য সরকার থেকে ভর্তুকিও পাওয়া যায়।